ডামুড্যা উপজেলায় সাংবাদিককে হুমকির জেরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ আদালতের
শরীয়তপুর পত্রিকা প্রতিবেদকঃ
শরীয়তপুর ডামুড্যা উপজেলায় ২ সাংবাদিককে অকথ্য গালাগাল ও হত্যা হুমকির ঘটনায় ডামুড্যা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারের বিরুদ্ধে করা জিডির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে দিকে শরীয়তপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রুমানা আক্তার মামলার শুনানী শেষে এ আদেশ দেন। এসময় আদালতে দৈনিক আলোকিত সকাল পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আশিকুর রহমান হৃদয় ও দৈনিক যায়যায়দিন ভেদরগঞ্জ প্রতিনিধি শাহাদাৎ হোসেন হিরু উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারের বিরুদ্ধে গত ১৯ আগস্ট ডামুড্যা থানায় জিডি করেন সাংবাদিক আশিকুর রহমান হৃদয়। তদন্তের জন্য অনুমতি চেয়ে গত ২০ আগস্ট আদালতে পাঠান ডামুড্যা থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সিরাজ। এজাহারে সুত্রে যানা যায়, ডামুড্যা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রথি কান্ত মিস্ত্রি কর্তৃক ৭ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
গত ১৬ আগষ্ট বিকেলে সেই ঘটনা জানার জন্য শরীয়তপুর জেলায় কর্মরত দুইজন সাংবাদিক ডামুড্যা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যান। সেখানে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারের কাছে অডিও ভাইরালের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি তথ্য দিতে পারবেন না বলে অপারগতা প্রকাশ করেন। সাংবাদিকরা সেখান থেকে চলে আসলে তার কিছুক্ষণ পর অর্থাৎ সন্ধ্যা টার দিকে প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকার প্রথমে সাংবাদিক সাহাদাত হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে হত্যার হুমকি দেন পরে সাংবাদিক আশিকুর রহমানের মোবাইলে কল দিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন এবং তাদেরকে দেখে নেয়া সহ প্রাণ নাশের হুমকি দেন।
প্রসঙ্গত : শরীয়তপুরের ডামুড্যায় স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে, তদন্তে গঠন করা হয়েছে কমিটি। পরে তোপের মুখে পড়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারও। অভিযুক্ত রথি কান্ত ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের পাশাপাশি ছাত্রী স্কাউটেরও ইন্সট্রাক্টর। বিদ্যালয়ের তিন ছাত্রী ও দুজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কিছুদিন আগে এক ছাত্রী স্কাউটে ভর্তি হতে আগ্রহ দেখায়। ছুটির পর তাকে স্কুলের একটি কক্ষে দেখা করতে বলেন শিক্ষক রথি কান্ত। মেয়েটি সেখানে গেলে তাকে যৌন হয়রানি করা হয়। মেয়েটি পালিয়ে বের হয়ে ঘটনা জানায় স্কাউটের বন্ধুদের।
আরেক ছাত্রী জানায়, এ ঘটনা নিয়ে স্কাউটে বন্ধুদের সঙ্গে মেয়েটির কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পরে ফেসবুকে। এরপর ডামুড্যা উপজেলা শহরে বিষয়টি জানাজানি হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিক আশিকুর রহমান হৃদয়’র আইনজীবি মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক জিডিটি তদন্তের নির্দেশ দেন। একজন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অশুভ আচরণ আর হত্যার হুমকির ঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংবাদ সম্পর্কে আপনার মতামত