পদ্মা নদীতে বেগম রোকেয়া ও সুফিয়া কামাল নামে দুই ফেরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষ

1 min read

শরীয়তপুর পত্রিকা  প্রতিবেদকঃ

মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের মাঝিরঘাট থেকে যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে ছেড়ে যাওয়া দুটি ফেরির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে ফেরিতে থাকা এক পিকআপ ড্রাইভার খোকন শিকদার (৪০) নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০ জন। রবিবার (১৯ জুন) ভোর সোয়া ৫টার দিকে পদ্মা নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।  নিহত খোকন ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া চিংবাখালি এলাকার হারুণ শিকদারের ছেলে।

ফেরির চালক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাত থেকেই পদ্মা নদীতে প্রচণ্ড স্রোত ছিল। এই স্রোতের মধ্য দিয়ে ফেরি চলাচল করছিল। ভোর রাতের দিকে বেগম রোকেয়া ও সুফিয়া কামাল নামে দুই ফেরি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি। এ সময় তাদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুটি ফেরির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। এ সময় ফেরিতে থাকা একজন গাড়ির চালক আহত হয়। আরেক চালক নদীতে পড়ে যায়। সংঘর্ষের পর দুটি ফেরিই নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছে যানবাহন ও যাত্রীদের নামান।

বিআইডব্লিউটিসি’র মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ আলী জানান, প্রতিদিনের মতো যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে একটি ফেরি শিমুলিয়া ঘাট থেকে মাঝিকান্দি যাচ্ছিল। অপরদিকে অন্য একটি ফেরি মাঝিকান্দির ঘাট থেকে শিমুলিয়া যাচ্ছিল। তখন পদ্মা নদীর টার্নিং পয়েন্টে এলে দুই ফেরির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ফেরিতে থাকা এক যাত্রী নিহত হন। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০ জন।

বিআইডাব্লিউটিসি শিমুলিয়াঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জামাল হোসেন ও বিআইডব্লিউটিএ সাত্তার মাদবর মাঝিঘাটের শুল্ক আদায়কারী তৌফিকুল ইসলাম জানান, ফেরি সুফিয়া কামাল ৩০টি যানবাহন নিয়ে শরীয়তপুরের মাঝিকান্দি থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়াঘাটে যাচ্ছিলো, একই নৌ-পথে ৩৪টি যানবাহন ও অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে মাঝিকান্দির অভিমুখে আসছিল ফেরি বেগম রোকেয়া। দুটি ফেরি পদ্মা নদীর টার্নিং পয়েন্ট জাজিরা প্রান্তে পৌঁছালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দুটি ফেরির সামনের অংশ। বিকল হয়ে যায় বেগম রোকেয়া ফেরি গাড়ি উঠানামার রেম্প। এসময় সুফিয়া কামাল ফেরিতে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। আহত হয় অন্তত ১০ জন। এতে ফেরিতে থাকা ১০/১২টি গাড়ির ক্ষতি হয়। পরবর্তীতে সুফিয়া কামাল শিমুলিয়াঘাটে ও বেগম রোকেয়া মাঝিকান্দি ঘাটে পৌঁছে নোঙর করেছে। অন্যান্য যাত্রীরা নিরাপদ রয়েছে।

সুফিয়া কামাল ফেরির মাস্টার মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘নদীতে প্রচণ্ড স্রোতে টার্নিংয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। তবে যাত্রীরা জানিয়েছেন, অবহেলার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবু তাহের জানান, ফেরি দুর্ঘটনায় নিহত ব্যাক্তির মরদেহ মাওয়া নৌ-পুলিশ ক্যাম্পে রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে কোন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে কি না এখনো বলা যাচ্ছে না।

প্রসঙ্গত এই রুটে বর্তমানে ৬টি ফেরি চলাচল করছে।

সংবাদ সম্পর্কে আপনার মতামত

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.