তরুণীকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, রুদ্রকর ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ৭
1 min readশরীয়তপুর সদর উপজেলার একটি গ্রামে এক তরুণীকে (১৮) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় জুয়েল ফরাজী (২৪) ও সুমন বয়াতী (১৮) নামের দুজনের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় করা মামলায় রুদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজান ঢালীসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণের শিকার তরুণীকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, রুদ্রকর ইউপির ওই তরুণী ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। গতকাল ওই তরুণী তাঁর বান্ধবীকে নিয়ে গ্রামে বেড়াতে আসেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই তরুণী ও তাঁর বান্ধবীকে বসতবাড়ির উঠান থেকে কয়েকজন তুলে নিয়ে যান। অভিযুক্ত জুয়েল ফরাজীর বোনের বাড়ির একটি কক্ষে ওই তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। তখন তাঁর বান্ধবীকে পাশের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। ওই দুই তরুণীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। খবর পেয়ে স্বজনেরা জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। ওই দুই তরুণীর স্বজনেরা তাঁদের উদ্ধার করেন। পরে পালং মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
ওই তরুণী ও তাঁদের স্বজনদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা হলেন জুয়েল ফরাজী, সুমন বয়াতী, রুদ্রকর ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মিজান ঢালী, ইয়াছিন বয়াতী, সাহিন সরদার, খোকন সরদার ও রাসেল সরদার। ওই তরুণীর বাবা আজ দুপুরে পালং মডেল থানায় ওই সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের অভিযোগে মামলাটি করা হয়।
ওই তরুণীর বাবা প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুয়েল ফরাজী আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত। তার জ্বালায় মেয়েকে ঢাকায় পাঠিয়ে দিই। তারপরও তার কাছ থেকে মেয়েকে নিরাপদে রাখতে পারলাম না। রাতের আঁধারে সে কয়েকজনকে নিয়ে আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি।’
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই তরুণী বলেন, ‘আমি রাতে বাড়ির উঠানে বান্ধবীর সঙ্গে গল্প করছিলাম। তখন সবাই ঘরের ভেতরে টিভি দেখছিলেন। জুয়েল কয়েকজন লোক নিয়ে মুখে কাপড় গুজে আমাদের তুলে নিয়ে যায়। ও এভাবে আমার সর্বনাশ করবে, তা বুঝতে পারিনি। এখন আমি সমাজে মুখ দেখাব কীভাবে?’
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, এমন বর্ণনা দিয়ে এক তরুণীকে তাঁর স্বজনেরা হাসপাতালে ভর্তি করেন। আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। তিনি শঙ্কামুক্ত। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাবে।’
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় সাত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজনের বিরুদ্ধে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ এবং পাঁচজনের বিরুদ্ধে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে।
সংবাদসুত্র: প্রথমআলো।
সংবাদ সম্পর্কে আপনার মতামত