শিমুলিয়া-জাজিরা নৌপথে মোটরসাইকেল পারাপারে সকাল-সন্ধ্যা দুটি ফেরি চলবে
1 min readঅনলাইন ডেস্ক// মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা নৌপথে মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য ভোলা থেকে দুটি ফেরি আনা হচ্ছে।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় ফেরি দুটি শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছাবে। কাল মঙ্গলবার সকাল ছয়টা থেকে তা চলাচল শুরু করবে।
পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল পারাপার বন্ধ থাকায় ঈদে ঘরমুখী মানুষদের জন্য বিকল্প এ ব্যবস্থা চালু করছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। প্রায় ১০ মাস পর এই নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু করার জন্য দুই ঘাট ও পন্টুন সংস্কার করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি)।
বিআইডব্লিউটিসি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সব ধরনের বৈধ যানবাহন চলাচলের জন্য গত বছরের ২৬ জুন পদ্মা সেতু উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ওই দিন রাতে সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই তরুণের মৃত্যু হয়। এরপর সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। অনেকে ট্রাক-পিকআপে করে মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু পার হন।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া-শিবচরের বাংলাবাজার ও শিমুলিয়া-জাজিরা নৌপথ ব্যবহার করে যাতায়াত করতেন। এ অঞ্চলের অনেক মানুষ সহজে ঢাকায় যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন। মোটরসাইকেলের চালকেরা ফেরিতে পদ্মা নদী পারাপার হতেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় বিআইডব্লিউটিসি। তখন বিপাকে পড়েন মোটরসাইকেলে চলাচলকারীরা।
মোটরসাইকেলের চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে অনেকে ট্রাক-পিকআপে করে মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু পার হচ্ছেন। অনেকে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার ও লঞ্চে মোটরসাইকেল নিয়ে পারাপার হচ্ছেন। এতে ৪০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়।
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন সময় শরীয়তপুর, পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার সামনে ও ঢাকায় মানববন্ধন করেছেন মোটরসাইকেলের চালক ও মালিকেরা। এটা নিয়ে উচ্চ আদালতে রিটও করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, ঈদে যানবাহনের সংকট থাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে অনেকে বাড়িতে যান। তখন যাতে তাঁরা নির্বিঘ্নে পদ্মা নদী পারাপার হতে পারেন, তার উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য কাল সকাল থেকে এ পথে দুটি কে–টাইপের ফেরি চলবে। একেকটি ফেরিতে ১৫০ থেকে ১৬০টি মোটরসাইকেল পার হতে পারবে। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ফেরি চলবে। ভাড়া পড়বে ১৫০ টাকা।
গত বছর ২৫ জুন পর্যন্ত এ নৌপথে ফেরি চলাচল করেছে। গত ১০ মাসে ফেরি চলাচল না করায় পন্টুনের নিচে বালু ও পলি জমে। সড়ক থেকে পন্টুনে আসার সংযোগ সড়কের (গ্যাংওয়ে) কিছু অংশ নষ্ট হয়ে যায়। ফেরি চলাচলের সিদ্ধান্ত হওয়ার পর বিআইডব্লিটিসির শ্রমিকেরা সংযোগ সড়ক ও পন্টুন সংস্কার করেছেন। আর পন্টুনের নিচ থেকে ভেকু মেশিন দিয়ে বালু অপসারণ করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাট ও সাত্তার মাদবর মঙ্গল মাঝির ঘাটের ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের আগে মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য ফেরি চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনেক দিন যাবৎ ফেরি চলাচল না করায় পন্টুনে কিছু ময়লা–আবর্জনা জমে। শ্রমিকেরা সেগুলো পরিষ্কার করে পন্টুন প্রস্তুত করেছেন।
প্রফুল্ল চৌহান আরও বলেন, দুটি ফেরি ভোলা থেকে আনা হচ্ছে। সন্ধ্যার মধ্যে তা শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছে যাবে। কাল সকাল ৬টা থেকে এ নৌপথে ফেরি দুটি চলবে। ঈদের পরও মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য ফেরি চলবে। তবে তা কত দিন থাকবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
সংবাদ সম্পর্কে আপনার মতামত