অনিয়মের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রকৌশলীর দ্বারা হেনস্তার শিকার-গণমাধ্যমকর্মী

শরীয়তপুর পত্রিকা প্রতিবেদকঃ 

রাস্তার কাজের অনিয়মের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রকৌশলীর দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। এরপরেও বিভিন্ন ভাবে ওই সাংবাদিকদের হুমকি প্রদান করে যাচ্ছেন প্রকৌশলী আবু নাইম নাবিল। অপেশাদার এমন আচরণ করায় প্রকৌশলী আবু নাইম নাবিলের অপসারণ করে বিভাগীয় শাস্তির দাবি জানিয়েছে সাংবাদিক নেতারা।

সোমবার (২৪ মার্চ) বেলা ১১ টায় শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রেসক্লাবসহ শরীয়তপুরের অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) গণমাধ্যম কর্মীরা জানতে পারে ডামুড্যা উপজেলার খেজুরতলা নামক স্থানে রাস্তার কার্পেটিং কাজ চলমান রয়েছে। নতুন এই রাস্তাটির কার্পেটিংয়ের বিটুমিনের সঙ্গে পুরোনো রাস্তা ও পুরোনো সেতু থেকে তুলে আনা পুরোনো পাথর মেশানো হচ্ছে। এমন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হতে ঘটনাস্থলে যায় দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজন, দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিনিধি জাহিদ হাসান রনি, বাংলা টিভির প্রতিনিধি নয়ন দাসসহ কয়েকজন সাংবাদিক। এসময় তারা দেখতে পায়, নতুন রাস্তার কার্পেটিংয়ের বিটুমিনে মেশানোর জন্য ঘটনাস্থলে রাস্তা থেকে তুলে আনা পুরানো কার্পেটিংয়ের পাথর ও পুরোনো সেতু ভাঙ্গার পুরানো পাথর রাখা আছে। বিষয়টি ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ডামুড্যা উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবু নাইম নাবিলের কাছে জানতে চাইলে উত্তেজিত হয়ে যান তিনি। এসময় তিনি বলেন, কাজের কি বোঝোস? তোরা কারা? তোদের পরাশোনার যোগ্যতা কি? গেট লস্ট। এখান থেকে বের হয়ে যা, এখনই বের হ। এরপর তিনি সোহাগ খান সুজন, জাহিদ হাসান রনিকে ধাক্কা মেরে লাঞ্চিত করেন। এসময় তিনি আরও বলেন, আমার মন্ত্রী সচিব আছেন, জেলা এক্সেন ( প্রোকৌশলী) আমি গুনি না। তোদের পরিচয় বল, আমার শশুর বাড়ির আত্মীয় টিভি চ্যানেলের চিফ রিপোর্টার। এভাবেই তিনি সাংবাদিকদের শায়েস্তা করার হুমকি দেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরেও আবু নাইম নাবিল ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে জীবন নাশের হুমকি প্রদান প্রদান করেছেন। এটা কোনো পেশাদার কর্মকর্তার আচরণ হতে পারে না। অবিলম্বে প্রকৌশলী আবু নাইম নাবিলকে অপসারণ করে বিভাগীয় শাস্তি নিশ্চি করতে হবে।

মানববন্ধনে প্রথম আলোর শরীয়তপুর প্রতিনিধি সত্যজিৎ ঘোষ বলেন, গণমাধ্যম কর্মীরা জনগণ, পাঠক, দর্শকের কাছে সত্য প্রচারে দায়বদ্ধ। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রকৌশলী আবু নাইম নাবিল গণমাধ্যম কর্মীদের হেনস্থা করেছেন। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলতে চাই, এলজিইডির জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে যারা আছেন, তারা যেন দ্রুত আবু নাইম নাবিলকে অপসারণ করে বিভাগীয় শাস্তি নিশ্চিত করেন।

মানববন্ধন শেষে গণমাধ্যম কর্মীরা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

মানববন্ধনে শরীয়তপুর প্রেসক্লাব, প্রিন্ট ও অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, শরীয়তপুর অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, বাংবাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) জাজিরা প্রেসক্লাব, নড়িয়া প্রেসক্লাব, সখিপুর থানা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ আরও উপস্থিত ছিলেন,আজকের শরীয়তপুর পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক টি এম গোলাম মোস্তফা, দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি রায়হান কবীর সোহেল, এখন টেলিভিশনের প্রতিনিধি কাজী মনিরুজ্জামান, বিটিভির প্রতিনিধি মফিজুর রহমান রিপন, সময় টিভির প্রতিনিধি বিএম ইাস্রাফিল, মোহনা টিভির প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান, মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রতিনিধি কবির উজ্জামানসহ অন্যান্যরা

সংবাদ সম্পর্কে আপনার মতামত

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.