বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী পালিত শরীয়তপুর
1 min readশরীয়তপুর পত্রিকা প্রতিবেদকঃ
শরীয়তপুরে মহীয়সী বঙ্গমাতার চেতনা অদম্য বাংলাদেশের চেতনা” শ্লোগানে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসন, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, বাঙালির লড়াই সংগ্রাম-আন্দোলনের নেপথ্যের প্রেরণাদাত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী পালন করছে।
সোমবার (৮ আগস্ট) সকাল ৮টায় শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের আম্রকাননে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল চত্বরে স্থাপিত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পন করা হয়। সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী কর্মক্ষম ও দুস্থ মহিলাদের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণের অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার উপভোগ, বেলা ১১টায় জেলার কর্মক্ষম ও দুস্থ মহিলাদের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ, মহীয়সী বঙ্গমাতার চেতনা অদম্য। বাংলাদেশের চেতনা” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম আবদুল্লাহ আল মুরাদ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শামীম হোসেন রেজা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গাজী শফিকুল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, শরীয়তপুর পৌরসভা মেয়র পারভেজ রহমান জন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাফিয়া ইকবাল। বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান এ্যাড রওশনারা বেগম, ‘আমরাই পারি’ জেলা আহবায়ক এ্যাড. রাশিদা মির্জা, ডামুড্যা পৌরসভা মেয়র রেজাউল করিম রাজা।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, বাঙালির লড়াই সংগ্রাম-আন্দোলনের নেপথ্যের প্রেরণাদাত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী। এই মহিয়সী নারী ১৯৩০ সালের এই দিনে ফরিদপুরের তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।
শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আপসহীন লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে শুধুমাত্র বাঙালি জাতির পিতাই হননি, বিশ্ব বরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছিলেন। এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারই সহধর্মিণী, মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।
মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বেগম মুজিব তার পিতা-মাতা দুই জনকেই হারান এবং ১৯৩৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শুধু সহধর্মিণীই ছিলেন না, ছিলেন সহযোদ্ধা ও কর্মপ্রেরণাদাত্রী। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সব দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জাতির সেবায় মনোনিবেশ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, রাজনীতির নানা দুঃসময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুকে দিয়েছিলেন গঠনমূলক পরামর্শ। তার বলিষ্ঠ ও সময়োপযোগী পরামর্শসমূহ জাতির জীবনে সুফল বয়ে এনেছে, যা জাতীয় ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হিসেবে দীর্ঘকাল তার পাশে থেকে মানবকল্যাণ ও রাজনীতির যে শিক্ষা তিনি লাভ করেছেন, তাতে তিনি একজন বিদুষী ও প্রজ্ঞাবান নারীতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবনে ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস হয়েছিলেন বেগম মুজিব। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয়-দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বারে বারে পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি ছিলেন, তখন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বঙ্গমাতার কাছে।
ছুটে আসতেন তিনি তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিক-নির্দেশনাবুঝিয়ে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে অনুপ্রেরণা যোগাতেন। বিশেষ করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় প্যারোলে বঙ্গবন্ধুর মুক্তি নিয়ে একটি কুচক্রীমহল বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাঙালির মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি ভেঙ্গে না পড়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন দৃঢ়তার সঙ্গে। যুদ্ধ পরবর্তীকালে দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে কাজ করেছেন, গরিব-এতিম অসহায় মানুষদের সাহায্য করেছেন, বীরাঙ্গনাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার মতো মহৎ দায়িত্ব পালন করেছেন।
এই মহীয়সী নারী ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সপরিবারে খুনিচক্রের বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে শহীদ হন।
সংবাদ সম্পর্কে আপনার মতামত