ডামুড্যা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত
1 min readশরীয়তপুর পত্রিকা প্রতিবেদকঃ
শরীয়তপুরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে ডামুড্যা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রথি কান্ত মিস্ত্রিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
১৭ আগষ্ট বুধবার সকালে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক তাকে বরখাস্ত করেন।
এর আগে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন মোল্লাকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্যের উপস্থিতিতে এক জরুরী সভা করেন নাহিম রাজ্জাক। সেই সভায় সহকারী শিক্ষক রথি কান্ত মিস্ত্রিকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকার সাংবাদিকের সাথে যে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন তার ব্যাপারে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেননি বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাহিম রাজ্জাক। কেন তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন না, তা নিয়ে সাংবাদিকদের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
ঘটনার মূল বিবরণ
ডামুড্যা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ
শরীয়তপুরের ডামুড্যা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শ্রী রথি কান্ত মিস্ত্রীর বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানী করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুধু তাই নয়, ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আদর করার নামে প্রতিনিয়ত তাদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করলে প্রধান শিক্ষক উল্টা শিক্ষার্থীদের চোখ রাঙ্গানী দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর দেয়া ৫ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের অডিও ক্লিপ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত রথি কান্ত মিস্ত্রী ওই বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষা ও স্কাউট বিষয়ক সহকারী শিক্ষক। সেই সুবাদে তিনি স্কাউটিং প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।
তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার স্কাউটদের সাপ্তাহিক ট্রুপ মিটিং ছিল। কোন কারণ ছাড়াই তিনি সেই মিটিং বাতিল করে দেন। পরবর্তীতে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে বলে ওই শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে যান। তারপর সেখানে ওই শিক্ষার্থীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন।
এই বিষয়টি শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারের কাছে জানালে, প্রধান শিক্ষক বিষয়টিকে ধামাচাঁপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
ডামুড্যা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়রত সপ্তম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোঃ মহসিন মিয়া বলেন, আমরা এখন যে অভিযোগ গুলো শুনেছি তা যদি সত্যি হয়, তাহলে আমার মেয়েকে আর এই বিদ্যালয়ে পড়াবো না।
এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক রথি কান্ত মিস্ত্রীর সাথে বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করতে গেলে তাকে বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিফ করেনি।
এ বিষয়ে ডামুড্যা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং তাকে দেখে নেয়া সহ প্রাণনাশের হুমকি দেন।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শ্রী শ্যামল চন্দ্ৰ শর্মা বলেন, আমি ব্যাপারটি গত কাল শুনেছি। শিক্ষক সাহেব যে কাজটি করেছেন, তা নিতান্তই অন্যায় কাজ করেছেন। আমি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করবো তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ ব্যাপারে ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাছিবা খান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার মাধ্যমেই আমি ব্যাপারটি জানলাম। আমি খোঁজ নিচ্ছি। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে অবশ্যই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ধরনের ন্যক্কারজনক কাজ করে কেউ রেহাই পাবে না।
সংবাদ সম্পর্কে আপনার মতামত