ভেদরগঞ্জ নারায়নপুরে এলজিইডির রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম

1 min read

শরীয়তপুর পত্রিকা  প্রতিবেদকঃ

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড মুন্সি বাড়ি সড়ক থেকে ৬০০ মিটার রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অর্থায়নের রাস্তা। নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শেখ এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে কাজ নেওয়া সাব-কন্টাক্টর ঠিকাদার ওমর ফারুক পাঙ্কু। এ কাজে অত্যন্ত নিম্নমানের নাম্বারবিহীন ইট ও মাটিযুক্ত বালু ব্যবহার করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা বলেন, এই রাস্তার কাজ তদারকিতে ভেদরগঞ্জ উপজেলার এলজিইডি কর্মকর্তাদের গাফিলতি আছে বলেও অভিযোগ করেন। এলজিইডির ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রকল্পে কার্পেটিং কাজের অনুকূলে ৬১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ প্রকল্পের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাস্তার দুই পাশের কাটা মাটির মিশ্রিত বালি দিয়ে বক্স না করেই নিম্নমানের ইট খোয়াসহ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছে রাস্তায়। এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি’রা অনিয়মের কারণে কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হলেও এখনও অনিয়মের মাধ্যমে দিয়েই ওই কাজ সমাপ্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদার ওমর ফারুক পাঙ্কু।

এসব রাস্তায় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের ফলে কিছু দিনের মধ্যেই রাস্তা গুলো ভেঙে পানিতে যাচ্ছে সরকারি টাকা। কয়েক মাস যেতে না যেতেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে এসব সড়ক। ফলে সরকারি বরাদ্দে অবমূল্যায়নের ফলে দুর্ভোগের শিকার হতে হয় এলাকাবাসীদের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করা হচ্ছে। বালুর পরিবর্তে কাদামাটি দিয়ে তার ওপর নিম্নমানের পুরোনো ইটের খোয়া ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নিম্নমানের ইটের ভাঙা অংশ রাবিশ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এতেও নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। রাস্তার কাজে স্থানীয় স্থানীয় সরকার প্রকৗশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কাউকে এসে তদারকি করতে দেখা যায়নি। অথচ ইটে পা দিয়ে চাপ দিলে তা ভেঙে যাচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার বলেন, সাব কন্ট্রাক্টে দেয়া ঠিাকাদারকে টেন্ডারের চুক্তি অনুযায়ী কাজ করার কথা বললেও কোনো তোয়াক্কা না করে অনুমোদন বিহীন নিম্নমানের বালি ও কংক্রিট দিয়ে কাজ সম্পূর্ণ করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শেখ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোঃ মানিক শেখ’কে একাধিক বার ফোন দিয়ে পাওয়া যায় নি। তবে কথা হয় তার ম্যানেজার পরিচয়দানকারী বাপ্পির সাথে। এ রাস্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান , কাজের মান এলজিইডি তদারকি করে বিল দেবেন।

এলজিইডির ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী অনুপম চক্রবর্তী বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে এসও মো: ইব্রাহিম সাহেবকে পাঠিয়েছি। নিম্নমানের নিমার্ণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করার সত্যতা পেয়ে তিনি কাজ বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দিয়ে অনিয়মের বিষয়ে অবহিত করেছি। তবে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম পুনরায় আমাদেরকে না জানিয়ে কাজ শুরু করেছেন। উন্নয়ন কাজের চুক্তি মোতাবেক কাজ না হলে ও কাজে অনিয়ম হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, সড়কের কাজে অনিয়ম হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযুক্ত ঠিকাদার মোঃ ওমর ফারুক পাঙ্কু মুঠোফোনে কাজের অনিয়মের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, আমার কাজ ভালো হচ্ছে, এ কাজ এলজিইডিই বুঝে নেবে।

শরীয়তপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান ফরাজী বলেন, রাস্তার কাজে অনিয়ম পেলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি খোঁজ-খবর নিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।

সংবাদ সম্পর্কে আপনার মতামত

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.