ইউটিউব দেখে চায়না কমলা চাষ করে সফল সখিপুরের কৃষক রোকন মাল
ভেদরগঞ্জ” শরীয়তপুর প্রতিনিধি।।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরে ইউটিউব দেখে চায়না কমলাবাগান করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কৃষক রোকন মাল। তার বাগানের দেড় শতাধিক গাছে থোকায় থোকায় কমলা ধরেছে। কমলা আকারে যেমন বড়, তেমন স্বাদেও খুব মিষ্টি।
উপজেলার সখিপুর থানার দক্ষিণ তারাবুনিয়া ইউনিয়নের জাফর আলী মালকান্দি গ্রামে চার বছর আগে পৈতৃক ৩২ শতাংশ জমিতে চায়না কমলার বাগান করেন রোকন মাল। বাগানে দেড় শতাধিক কমলার চারা রোপণ করেন। গাছগুলোতে ফল এসেছে। প্রতিটি গাছে ২০ থেকে ৩০ কেজি করে কমলা ধরেছে।
রোকন মালের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছগুলোতে প্রচুর কমলা ধরে আছে। কোনোটা পেকে হলুদ হয়ে গেছে। আবার কোনোটা সবুজ রয়ে গেছে। রোকন মাল ও তার ছোট ছেলে পরিচর্যা করছেন বাগান।
রোকন মাল কমলার চাষের সাফল্য দেখে তার নিজ এলাকা তো বটেই, আশপাশের বিভিন্ন এলাকার লোকজন কমলা চাষে উৎসাহী হচ্ছেন।
রোকন মাল জানান, গত বছরও ফল ধরেছে, তবে তেমন সাফল্য পাননি। কিন্তু তিনি কৃষি বিভাগের পরামর্শে এ বছর ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। সর্বোচ্চ ৩৫ কেজি কমলা ধরেছে একটি গাছে। সামনে ফলন আরো বাড়বে।
শরীয়তপুর সদর থেকে ঘুরতে আসা সাইফ রুদাদ নামে একজন বলেন, রোকন মালের বাগানের কমলা ভালো ফলন দেখে তিনি নিজেও কমলা চাষ করবেন বলে জানান। এছাড়া আশপাশের উৎসাহী লোকজনসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার লোকজন এসেছেন কমলার বাগান দেখতে।
সজিব নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী বলেন , প্রথম যখন এখানে চারাগুলো রোপণ করে, তখন ভেবেছিলাম জাম্বুরা গাছ। কিন্তু বড় হওয়ার পর এখন দেখতেছি এগুলো চায়না কমলা গাছ। অনেক দূর থেকে এখানে মানুষ আসে, ছবি তোলে। আমার কল্পনায়ও ছিল না যে আমার বাড়ির পাশে কমলা বাগান হবে। বাগানে ঘুরতে এলে আমার বেশ ভালোই লাগে। তিনিও কমলাবাগান করতে আগ্রহী।
রোকন মাল বলেন, ২০২০ সালে আমার বড় ভাই সৌদি প্রবাসী শামছুল রহমান খোকন ইউটিউবে চায়না কমলাচাষের ভিডিও দেখেন। পরে অনলাইনের মাধ্যমে দেড় শতাধিক কলম কাটা চারা অর্ডার করেন চুয়াডাঙ্গা জেলার এক নার্সারি মালিকের থেকে। পরে কুরিয়ারে আসলে আমি চারাগুলো সংগ্রহ করি এবং রোপণ করি। গতবছরও গাছে কমলা ধরেছিল। কমলাগুলো প্রায় এক লাখ টাকা বিক্রি করেছি। তবে গতবছরের চেয়ে এ বছর অনেক বেশি কমলা ধরেছে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (কৃষিবিদ) ফাতেমা ইসলাম বলেন, সখিপুরে চায়না কমলাবাগান করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন রোকন মাল নামের এক কৃষক। তাকে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। আগামীতে আমরা কমলাগাছ রোপণ ও পরিচর্যার বিষয়ে চাষিদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা ভাবছি।
সংবাদ সম্পর্কে আপনার মতামত